March 27, 2024

অভিনেতা হিসেবে রঞ্জিত মল্লিককে (Ranjit Mallick) সবাই চিনলেও ব্যক্তি হিসাবে তিনি কেমন সেটা কাছের মানুষ ছাড়া সবার কাছেই প্রায় অজানা। জনপ্রিয় এই অভিনেতার না জানা দিক নিয়ে প্রথমবার কথা বললেন সহধর্মিণী দীপা মল্লিক (Deepa Mallick)।

টলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক দীর্ঘদিন ধরে বাংলা সিনেমায় তাঁর অসাধারণ অভিনয় দক্ষতার পরিচয় দিয়ে গিয়েছেন। ১৯৭১ সালে মৃনাল সেন (Mrinal Sen) পরিচালিত ‘ইন্টারভিউ’ (Interview) সিনেমার মধ্যে দিয়ে বাংলা সিনেমা জগতে তাঁর পদার্পন ঘটেছিল। এর পরে ‘ইন্দ্রজিৎ’ (Indrajit), ‘শাখা প্রশাখা’ (Shakha Proshakha ), ‘সন্তান’ (Santan ) , ‘নিয়তি’ (Niyoti) , ‘জীবন নিয়ে খেলা’ (Jibon Niye Khela ) সহ একাধিক সিনেমায় তাঁর অসাধারণ অভিনয় আজও মানুষের মনে গেঁথে রয়েছে। তবে ‘শত্রু’ (Shatru ) সিনেমায় শুভঙ্কর স্যান্যাল নামে এক সৎ পুলিশ অফিসারের চরিত্র তাঁকে একসময় বেশি পরিচিতি দিয়েছিল।

বর্তমানেও তিনি অভিনয় জগতের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তবে আগে যেমন প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করতেন এখন সেই ভূমিকায় তাঁকে অভিনয় করতে দেখা যায়না । সংবাদসূত্রের খবর অনুযায়ী দীর্ঘ ১৪ বছর পরে আবার প্রধান ভূমিকায় দেখতে পাওয়া যাবে তাঁকে। পুলিশ অফিসার শুভঙ্কর স্যানালের পরিবর্তে আইনজীবী শুভঙ্কর স্যানাল হিসেবে নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ ঘটবে তাঁর। টলিউড ইন্ডাস্ট্রির সাথে দীর্ঘদিন জড়িত থাকার সুবাদে অভিনয়ের বাইরেও তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই চেনেন। তা সত্ত্বেও চেনা গন্ডির বাইরে ব্যক্তি রঞ্জিত মল্লিক সেইভাবে কখনো প্রকাশ্যে আসেননি। এতদিন বাদে প্রধান চরিত্রে তাঁর ফিরে আসা নিয়ে কথা বললেন স্ত্রী দীপা মল্লিক। এক সাক্ষৎকারে অভিনেতার স্ত্রী জানিয়েছেন স্ক্রিপ্টের ব্যাপারে বরাবরই একটু খুঁতখুঁতে অভিনেতা। ভালো স্ক্রিপ্ট না হলে কাজ করতে রাজি হন না। এই চরিত্রে অভিনয়ের প্রধান কারণ হিসেবে দীপাদেবী জানিয়েছেন চরিত্রটি তাঁর মনের মতো হয়েছে বলেই তিনি রাজি হয়েছেন। বর্তমানের সামাজিক দুরাবস্থা তাঁকে বেশ কষ্ট দেয়। আইনজীবী হিসাবে সেইসব দুর্নীতির প্রতিবাদ করার সুযোগ পাবেন অভিনয়ের মাধ্যমে।

 

শত্রু সিনেমাটি মুক্তির পরেই বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল মূলত পুলিশ অফিসার শুভঙ্কর স্যানালের চরিত্রে রঞ্জিতবাবুর অসাধারণ অভিনয়ের কারণে। সিনেমার সাথে সাথে চরিত্রটিও মানুষের কাছে বাস্তবে প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আইকনিক এই চরিত্র নিয়েও নিজের মনের কথা ওই সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিকের (Koel Mallick) মা। মহানায়ক উত্তম কুমারের (Uttam Kumar) প্রয়ানের পরেই মুক্তি পেয়েছিল সিনেমাটি। সর্বকালের সেরা অভিনেতার এইভাবে চলে যাওয়াতে শুধুমাত্র বাংলা সিনেমা জগৎ নয়, সমগ্র সিনেমাপ্রেমী মানুষই শোকে বিহ্বল হয়ে গিয়েছিলেন। এমতবস্থায় তাঁর অভিনীত সিনেমাটি মানুষের মনে কতটা জায়গা করে নিতে পারবে এই নিয়ে সন্দেহ ছিল। তবে স্ক্রিপ্ট এবং চরিত্রের দৃঢ়তার কারণে এই সিনেমাটির সাফল্য নিয়ে বেশ আশাবাদী ছিলেন রঞ্জিতবাবু। বহু বছর পরে একই নামে আর একজন প্রতিবাদী মানুষকে দেখে দর্শকদের যে আবারো ভালো লাগবে সেটা বলাই বাহুল্য।

স্বর্ণযুগের প্রথম সারির অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রঞ্জিত মল্লিক। পার্শ্বচরিত্র ছাড়াও বেশ কিছু সিনেমায় নায়কের চরিত্রে তাঁর অভিনয় এবং সংলাপ দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছে। প্রিয় নায়কের এইভাবে আবার ফিরে আসাকে দর্শক খুব ভালোবেসেই গ্রহণ করবে বলে আশা করা যায়।