![](https://sangbad24online.in/wp-content/uploads/2022/07/20220731_144816.jpg)
প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী নির্মলা মিশ্র শনিবার রাতে দক্ষিণ কলকাতার চেতলায় নিজের বাড়িতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন। রাত ১২টা ৫ মিনিট নাগাদ বাড়িতেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তাঁর পরিবারে স্বামী, পুত্র এবং পুত্রবধূ বর্তমান।
শিল্পীর চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই নির্মলা অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসার জন্য গত ৫ বছরে বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছিলেন।
নির্মলার পুত্র শুভদীপ দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, পরিবারের সকলের চোখের সামনেই শিল্পী প্রয়াত হন। ২০১৫-তে সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়। তারপর থেকেই শরীরের একটা পাশে পক্ষাঘাত। ২০১৮ থেকে ২০২২— এই চার বছর হাসপাতালে বারবার যেতে হয়েছে। শনিবার সকাল থেকেই শিল্পীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তারপর রাতে সব শেষ।
শিল্পীর শেষকৃত্য রবিবার হবে বলে জানিয়েছেন তাঁর পুত্র। তিনি জানিয়েছেন, সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের নার্সিংহোম থেকে নির্মলার দেহ প্রথমে বাড়িতে আনা হবে। সেখান থেকে সকাল ১০ টায় রবীন্দ্রসদন তারপর রাজ্য সঙ্গীত অ্যাকাডেমি হয়ে ক্যাওড়াতলা মহাশ্মশান নিয়ে যাওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের পক্ষ থেকে রবীন্দ্রসদনে রবিবার সকাল ১১টা থেকে প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে। বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী নির্মলা মিশ্রের প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শিল্পীর জন্ম অধুনা দক্ষিণ ২৪ পরগনায়, ১৯৩৮ সালে। তাঁর বাবা পণ্ডিত মোহিনীমোহন মিশ্র এবং মা ভবানীদেবী। বাবার চাকরিসূত্রেই তাঁদের কলকাতায় আসা। ষাটের দশকের একেবারে শুরুতে সঙ্গীত জগতে তাঁর প্রবেশ। আধুনিক, নজরুলগীতি, শ্যামাসঙ্গীত, দেশাত্মবোধক, লোকগীতি ছাড়াও বহু ছায়াছবিতে তিনি গান গেয়েছেন।
নির্মলার গাওয়া বিখ্যাত গানগুলির মধ্যে অন্যতম— এমন একটা ঝিনুক খুঁজে পেলাম না, সেই একজন দিও না তাকে মন, আবেশে মুখ রেখে, বলো তো আরশি তুমি, আমি তো তোমার হাসি কান্নার চিরদিনের সাথী, কাগজের ফুল বলে, ও তোতা পাখি রে… ইত্যাদি।
তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সঙ্গীত আকাদেমির উপদেষ্টা পরিষদ ও বাংলা সঙ্গীতমেলা কমিটির কার্যকরী সমিতির সদস্যা ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ২০১২ সালে ‘সঙ্গীতসম্মান’ এবং ২০১৩ সালে ‘সঙ্গীত মহাসম্মান’ ও ‘বঙ্গবিভূষণ’ সম্মাননা প্রদান করে।