মঙ্গলবার গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukherjee) চলে যাওয়ার পর বাঙালির মনে তৈরি হয়েছিল ক্ষত। তা আরও দগদগে হয়ে উঠেছে বুধবার ভোর থেকে। প্রয়াত হয়েছেন বাঙালির গর্ব, সুরকার ও গায়ক বাপ্পী লাহিড়ী (Bappi Lahiri)।
View this post on Instagram
অলকেশ লাহিড়ী থেকে বাপ্পী লাহিড়ী হয়েছিলেন অপরেশ লাহিড়ী (Aparesh Lahiri) ও বাঁশুরি লাহিড়ী (Bansuri Lahiri)-র একমাত্র পুত্রসন্তান। শৈশবে তবলায় হাতেখড়ি হলেও পরবর্তীকালে তিনি হয়েছিলেন সঙ্গীত পরিচালক ও গায়ক। বহু বছর মুম্বইয়ে থেকেও তাঁর হিন্দিতে ছিল বাংলা টান। আসলে এটাই ছিল বাপ্পী লাহিড়ী স্টাইল। বাঙালি পুরুষকে তিনিই শিখিয়েছিলেন সোনার গয়না পরা। সবসময়ই বলতেন, সোনা তাঁর কাছে পয়া। এহেন মানুষটির ঝুলিতে ছিল একাধিক রেকর্ড।
View this post on Instagram
মাত্র উনিশ বছর বয়সে নিজের মামা কিংবদন্তী কিশোর কুমার (Kishor Kumar)-এর হাত ধরে জলপাইগুড়ি থেকে মুম্বইয়ে পদার্পণ বাপ্পীর। তিনি এসেছিলেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও শ্যামাসঙ্গীতের আবহ থেকে। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বাপ্পীর ভিতকে মজবুত করলেও তাঁর পছন্দ ছিল এলভিস প্রেসলি। বাপ্পীর ভালো লাগত এলভিসের গান, তাঁর ফ্যাশন। পাশ্চাত্য সুরের প্রতি বাপ্পীর অনাবিল ভালোবাসা বলিউডের সঙ্গীত ঘরানায় জন্ম দিয়েছিল এই নতুন যুগের। বাপ্পী ছিলেন একমাত্র ভারতীয় সঙ্গীত পরিচালক যাঁকে স্বয়ং মাইকেল জ্যাকসন আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নিজের কনসার্টে।
বাপ্পীর রেকর্ড ব্রেকিং গান ‘জিমি জিমি’ সুপারস্টার বানিয়েছিল মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)-কে। কিন্তু পরবর্তীকালে এই গানটি রাশিয়া তথা সমগ্র ইউরোপে জনপ্রিয় হয়। হলিউডে অ্যাডাম স্যান্ডলারের ফিল্ম ‘ইউ ডোন্ট মেস উইথ দ্য জোহানে’-তে এই গানটি ব্যবহার করা হয়েছিল। 1986 সালে এক বছরে 33 টি ফিল্মে বাপ্পীর সুরে তৈরি হয়েছিল 180 টি গান। বাপ্পীর এই অভিনব কীর্তির জন্য তাঁর নাম ওঠে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। 1969 সাল থেকে টানা 2006 সাল অবধি নিজের সুরে গান গাইলেও 2006 সালেই প্রথমবার বিশাল (Vishal)-শেখর (Shekhar)-এর সুরে ‘ট্যাক্সি নং ন দো গেয়ারা’ ফিল্মে গান গেয়েছিলেন বাপ্পী।