বর্তমানে মেয়েরা যে আর কোনো ক্ষেত্রেই পিছিয়ে নেই তা প্রমাণ হয়েছে বহুবার। তাঁদের বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে উঠে এসেছে তাঁদের দক্ষতার ও নিপুনতার কথা। আর এই সকল লড়াকু নারীদের জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার গল্প উঠে আসে ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-র (Didi No 1) মতো প্ল্যাটফর্মে। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জি বাংলার পর্দায় রমরমিয়ে চলছে এই রিয়েলিটি শো। এতটুকুও জনপ্রিয়তা কমেনি।
রচনা ব্যানার্জির (Rachana Banerjee) নিখুঁত সঞ্চালনা একটা আলাদাই মাত্রা এনে দিয়েছে এই শোতে। সম্প্রতি এই শোতে হাজির হয়েছেন শম্পা মজুমদার (Shampa Majumder) নামের এক মহিলা। যিনি কাঁথাস্টিচের কাজ করে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। দিদির মঞ্চে এসে তিনি শেয়ার করেন ছোট থেকে কিভাবে ধীরে ধীরে তিনি আজ এই জায়গায় পৌঁছেছেন। শম্পা দেবী জানান যে – ছোট থেকেই তিনি সেলাই পছন্দ করতেন। এমনকি তাঁর ঠাকুমা, পিসিমা, মাসীমা, মা খুব ভালো সেলাই করতেন বলে জানান তিনি।
এরপর শম্পা দেবী জানান যে – ১৯৮০ সালে তাঁর বিয়ে হওয়ার পর তাঁর সঙ্গে লেখক মনোজ বসুর দিদির আলাপ হয়। তিনিই তাঁকে ওয়াল হ্যাংগিং করতে দেন। প্রথমে একটা-দুটো করতেন। তারপর একদিন কুড়িটার অর্ডার পান। এইভাবেই ধীরে ধীরে তাঁর ব্যবসার শুরু হয়। এরপর রেজিস্ট্রেশন বের করেন। তারপর বিভিন্ন জায়গা যেমন – পুনে, হায়দ্রাবাদ, কেরালা, দিল্লি, বোম্বে, কানপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় মেলা করেন।
২০০০ সালে রেজিস্ট্রেশন বার করার বছরেই জেলায় প্রথম হন বলে জানান শম্পা মজুমদার। এরপর তিনি প্রতি বছরই জেলার কমপিটিশনে প্রথম নয়তো দ্বিতীয় হয়ে এসেছেন। এছাড়া রবীন্দ্রভারতীতে প্রথম হয়েছেন। এমনকি ডিআইসি থেকেও তিনি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। তবে, যেই কাঁথাস্টিচের কাজ করে তিনি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন সেটি হল একটি ওয়াল হ্যাংগিং। যারমধ্যে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন ‘হান্টিং ফেস্টিভ্যাল’ অর্থাৎ আগেকার দিনে রাজরাজারা শিকার করার পর বনের মধ্যে যে উৎসব করতেন সেটাই ফুটে উঠেছে তাঁর শিল্পকলায়।
‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-র (Didi No 1) মঞ্চে এদিন তিনি জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার সার্টিফিকেটও দেখান। এমনকি তাঁর কিছু শিল্পকলাও দেখান। তবে, এখনেই শেষ নয়। তিনি ইতিমধ্যেই ‘শিল্প গুরু’র জন্য জিনিস জমা দিয়েছেন বলে জানান। এছাড়াও এরপর তিনি ‘পদ্মভূষণ’, ‘পদ্মবিভূষণ’ কম্পিডিশনে লড়াই করে জেতার স্বপ্ন দেখছেন। এমন লড়াকু মহিলার গল্প যে আরও অনেক মহিলাকে অনুপ্রাণিত করবে তা নিঃসন্দেহেই বলা যায়।