আশি নব্বইয়ের দশকে বাংলা সিনেমার জগতে এক ঘরের ছেলের আগমন ঘটেছিল। গোলগাল চেহারা, লাল টুকটুকে মুখ, আর এক মাথা কোকড়ানো চুল সব মিলিয়ে একটা সাধারণ ঘরের ছেলে।
‘দাদার কীর্তি’ থেকে ‘সাহেব’সব ছবিতেই অভিনয় দক্ষতার কোন তুলনাই নেই তিনি তাপস পাল। জানেন কি এই অভিনেতার মেয়ের পরিচয়?
পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলা চন্দননগরে জন্মগ্রহণ করেন তাপস। বাবা ছিলেন প্রখ্যাত ডাক্তার সেই সূত্র ধরেই প্যারামেডিকেল নিয়ে পড়াশোনা শুরু হয় তাপসের। কিন্তু ‘দাদার কীর্তি’ ছবির সহকারী পরিচালকের নজরে এসেই ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় তাপসের। তারপর হিট বাংলা ছবি মানেই সবার আগে তাপস পাল। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, চিরঞ্জিত ,অভিষেক, অর্জুন চক্রবর্তী দের মত অভিনেতাদের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন তাপস। ১৯৮৫ সালে ব্যবসায়ী পরিবারের মেয়ে নন্দিনীর সঙ্গে বিয়ে হয় তাপসের। তাদের সংসারে এক কন্যা সন্তান। তার নাম সোহিনী পাল।
ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা শেষ করবার পর বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য গিয়েছিলেন সোহিনী। তারপর দেশে ফিরে বাবার মতোই অভিনয় জগতে নাম লেখাতে চেয়েছিলেন সোহিনী। কমেডি ছবি ‘বউ ব্যারাকস ফরএভার’ দিয়েই সোহিনীর প্রথম অভিনয় জীবনে প্রবেশ। এরপর কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত জ্যাকপট সিনেমাতে অভিনয় করে নজর কাড়েন সোহিনী। যদিও পরে আর তেমনভাবে তাকে বড় পর্দায় দেখা যায়নি। পড়াশুনার কাজে মনোনিবেশ করার সাময়িক অব্যাহত দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি। তাপস পালের মতন মেয়ে সোহিনীও অসম্ভব সুন্দরী। যে কোনো টলিউড নায়িকা কে হার মানিয়ে দিতে পারে সোহিনীর সৌন্দর্য।
বাবাকে প্রচন্ড ভালবাসতেন সোহিনী। যাকে বলে একেবারে বাবা অন্তপ্রাণ। একবারে একটি সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তাপস পাল বলেছিলেন আমার ‘মেয়ে তোতাপাখির মতো কথা বলতে থাকে।’মাত্র ৬০ বছর বয়সে জীবনাবসান হয় তাপস পালের। খবর পেয়ে আমেরিকা থেকে ছুটে আসেন মেয়ে সোহিনী। মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে সমস্ত কর্তব্য পালন করেন। এখন মা মেয়ের ছোট সংসারে আঁকড়ে বেঁচে থাকবে তাপস পালের স্মৃতি।