আটচল্লিশ ঘন্টা আগেই প্রত্যাখ্যান করেছেন পদ্ম সম্মান। তাঁর সিদ্ধান্তকে সম্মানিত করেছেন একাধিক মানুষ। কিন্তু আটচল্লিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বুধবার সকাল থেকে করোনার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কিংবদন্তী গায়িকা গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukherjee)।
হঠাৎই বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তড়িঘড়ি গ্রীণ করিডোর করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। জানা গিয়েছে, তাঁর ফুসফুসে রয়েছে সংক্রমণ। নব্বই বছর বয়সী গায়িকা গতকাল রাতে বাথরুমে পড়ে গিয়েছিলেন। কয়েকদিন আগেও বাথরুমে পড়ে যান তিনি। গতকাল রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে ফোন করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সন্ধ্যার স্বাস্থ্য নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন তিনি। সন্ধ্যাকে এই মুহূর্তে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর জন্য তৈরি করা হয়েছে বিশেষ মেডিক্যাল টিম।
শোনা যাচ্ছে, অপমানিত হয়ে পদ্ম সম্মান প্রত্যাখ্যানের পর মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন সন্ধ্যা। মঙ্গলবার শেষ বিকালে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের পক্ষ থেকে তাঁর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। ইদানিং যথেষ্ট অসুস্থ সন্ধ্যা। অসুস্থতার কারণে ফোন না ধরলেও দিল্লি থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের জরুরী ফোন বলার পর, তিনি একপ্রকার বাধ্য হয়েই ফোন ধরেন। ফোনে তাঁকে বলা হয়, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করতে চান। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি এই সম্মান নেবেন কিনা! তাহলে অন্যান্য পুরস্কার প্রাপকদের সঙ্গে তাঁর নাম ঘোষণা করা হবে আগামীকাল সকালের মধ্যে। কিংবদন্তী শিল্পীকে এভাবে দায়সারা পদ্মশ্রী দেওয়ার কথায় স্বাভাবিক ভাবেই তিনি অপমানিত বোধ করেন।
বাংলার শিল্পী ও সাধারণ মানুষ বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সম্পর্কে বিন্দুবিসর্গ জানেন না। তিনি শুধুমাত্র একজন বাণিজ্যিক ফিল্মের সফল গায়িকা নন, একজন নামী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পীও। রয়েছে তাঁর অসংখ্য শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের রেকর্ড। উস্তাদ গুলাম আলি খান (Ustad Gulam Ali Khan) ও উস্তাদ আমির খান (Ustad Amir Khan)-এর ছাত্রী সন্ধ্যার প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের এহেন আচরণে ক্ষুব্ধ শিল্পীমহল ও গায়িকার অসংখ্য অনুরাগী।