মাঘ মাসে ভরা বিয়ের মরসুমে যেভাবে দিন দিন সোনালী ধাতুর দাম বাড়ছে তাতে মধ্যবিত্তদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। চারিদিকে বিয়ের সানাই বাজছে, কিন্তু সকলকার মনেই একটা প্রশ্ন সোনার দর এখন কত করে চলছে! তবে এর মধ্যেই আজ প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কলকাতায় প্রতি ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারেট সোনার দামে প্রায় ২ হাজার টাকা কমেছে। এছাড়া ২২ ক্যারেট সোনার দাম ২০৫০ টাকা কমেছে। আজ ২৬ শে জানুয়ারি ২২ ক্যারেট সোনার দর ৪৫ হাজার ৭৫০ টাকা হয়েছে।
তবে সাধারণত ক্রেতারা ২৪ ক্যারেট সোনা কিনতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কারণ এই সোনার বিশুদ্ধতা অন্য পর্যায়ের। তাই ক্রেতাদের একমাত্র ভরসার জায়গা ২৪ ক্যারেট। স্বাভাবিকভাবে দেখা যাচ্ছে ২২ ক্যারেট সোনার দাম ২ হাজার টাকা কমলেও ২৪ ক্যারেট সোনার দাম কোন রকম পরিবর্তন হয়নি। উল্টে বুধবার ২৬ শে জানুয়ারি ২৪ ক্যারেট সোনার দাম ৩০ টাকা করে বেড়েছে। প্রসঙ্গত, ২০২০ করোনার প্রথম ঢেউয়ে লকডাউনের সময় স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে হতে আগস্ট এর দ্বিতীয় সপ্তাহের পৌঁছে গিয়েছিল ৫৬,২০০ টাকার ঘরে। যা এখনো অবধি রেকর্ড দর হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে। আজ বুধবার, সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবসে স্বর্ণের দাম রেকর্ড দরের থেকে কম রয়েছে ৭,৭০০ টাকা।
সাধারণ মধ্যবিত্তদের কাছে এভাবে ঊর্ধ্বমুখী সোনার দাম খুবই চাপের হয়ে যাচ্ছে। কলকাতাবাসীরাও এই সোনার দামে যথেষ্ট চিন্তিত। তার ওপর আরো চিন্তা বাড়াচ্ছে বিয়ের মরসুম। এইদিন প্রজাতন্ত্র দিবসে ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারেট সোনার দামে ২ হাজার টাকা করে কমেছে। মঙ্গলবার ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারেট সোনা ৫০ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বুধবার সে সোনার দাম পড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৫০০ টাকায়। অন্যদিকে ১০ গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনার দাম দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৭৫০ টাকায়। তবে আপাত দৃষ্টিতে দেখলে সোনার দামের পতন ঘটলেও সাধারণ মধ্যবিত্তদের কাছে তা এখনও নাগালের বাইরে।
তবে সোনার দামে বৃদ্ধির ফলে ক্রেতাদের সাথে সাথেই বিক্রেতাদের ও কপালে চিন্তার ভাঁজ। সোনার দাম যদি আকাশ ছোঁয়া হয় তাহলে তারা সেভাবে আর সোনা কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন না। ফলে বিক্রেতাদের বাজার মার খাচ্ছে। তবে সরকারের তরফ থেকেই বিআইএস কেয়ার অ্যাপ চালু করা হচ্ছে। ক্রেতাদের সোনার বিশুদ্ধতা সংক্রান্ত সংশয় দূর করবে সরকার অনুমোদিত এই অ্যাপ। এর দ্বারা ক্রেতারা সহজেই স্বর্ণের বিশুদ্ধতা পরীক্ষা করতে পারবেন। এছাড়া হলমার্ক সংক্রান্ত বা অন্যান্য বিষয়ে যদি কোন অভিযোগ থাকে তাও এই অ্যাপ এর দ্বারা অভিযোগ জানানো যাবে।
তবে ইতিমধ্যেই প্রাক বাজেট অল ইন্ডিয়া জেম এন্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিল এর তরফ থেকে সোনার জিনিসের উপর আমদানি শুল্ক কমানোর দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়াও সোনার দামের উপর নির্দিষ্ট জিএসটি নির্ধারিত করার আবেদন জানানো হয়েছে। পয়লা ফেব্রুয়ারি সংসদে সেই আবেদন পেশ করা হবে। ইতিমধ্যেই অর্থ মন্ত্রকের কাছে সোনার দাম সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আর্জি জানানো হয়েছে। আপাতত সোনার ঊর্ধ্বমুখী দাম সংক্রান্ত এই সমস্ত সমস্যার সমাধান হলে ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয় মুখেই স্বস্তির হাসি ফুটবে।